চরফ্যাসন প্রতিনিধি॥ চরফ্যাসনের দুলারহাটে যৌতুকের দাবীতে চেয়ারের সাথে হাত পাঁ বেধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে পারভিন বেগম(২৮) নামের এক তিন সন্তানের জননী গৃহবধুর দু’হাত ভেঙে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের পর দু’হাত ভেঙে দিয়ে অচেতনবস্থায় বাড়ির প¦ার্শবর্তী রাস্তার পাশে ফেলে রেখে দেয় স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা। প্রতিবেশী এক নারী দেখতে পেয়ে চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা অচেতনবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাতে চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করেন। নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে নির্যাতনের শিকার গৃহবধুর ভাই মোঃ মনজু জানিয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় আহম্মদপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে গৃহবধুর স্বামীর গৃহে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। গতকাল শনিবার বিকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধু জানান, তার ছোট বেলায় বাবা মারা যান। এতিম হওয়ায় ২০১৭ সনে একটি বেসরকারী সংস্থার সহযেগিতায় স্বামীকে ওই সংস্থা দান হিসেবে একটি রিকসা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে আহাম্মদপুর ইউনিয়নে আবদুল লতিফ সরদারের ছেলে রফিকের সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে তিন সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকলোভী স্বামী তার কাছে নানান অজুহাতে যৌতুক দাবী করে আসছিলেন। বিধবা মায়ের পক্ষে জামাতার যৌতুকের দাবী পুরন করা সম্ভব না হওয়ায় তাকে প্রায় সময় শারিরিক নির্যাতন করা হতো। স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন সহ্য করে কেটে গেলে ১৭ বছর। সম্প্রতি সময়ে তার স্বামীর বসত ঘর মেরামতের কাছ চলছিলো। এসময় স্বামী রফিক তার( পারভিনের) মা ও ভাইদের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা এনে দিতে বলেন। গত শনিবার তার ছোট ভাই হোটেল শ্রমিক মনজু বোনের শান্তির কথা ভেবে বোনের জামাতাকে ৩০ হাজার টাকা দেন। শুক্রবার বিকালে স্বামীর দাবীকৃত বাকী ৭০ হাজার টাকা এনে দিতে বলেন। এনিয়ে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে র্তক বাধে। সন্ধ্যায় ফের স্বামী রফিক ওই টাকা এনে দিতে বলেন।গৃহবধু যৌতুকের বাকী ৭০ হাজার টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে স্বামী তাকে মারধর করেন। সন্ধ্যায় স্বামী রফিক, দেবর নিজাম, এমরান, ভাশুরের ছেলে টিপু,ঝা ইয়ানুর বেগম, হাজেরা বেগম মিলে চেয়ারের সাথে তার হাত পাঁ বেধে মধ্যযোগীয় কায়দায় নির্যাতন করেন। তিনি তাদের নির্যাতনের কবল থেকে মুক্তি পেতে আকুতি জানালেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। তারা মারধর করে তার দু’হাত ভেঙে গুড়িয়ে দেন। স্থানীয়রা ও স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাতে চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করেন। গৃহবধুর ছোট ভাই মনজু জানান,বোনর জামাতা যৌতুক হিসেবে ১ লক্ষটাকা দাবী করেন। বোনের সংসারে শান্তির জন্য তার দাবী মতে তাকে ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়। বাকী টাকার জন্য তার স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা বোনকে নির্যাতন করেন এবং মারধর করে দুই হাত ভেঙে দেয়। বোন অচেতন হয়ে পরলে তাকে বাড়ির তার স্বামীর বাড়ির পাশের রাস্তায় ফেলে আসে। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যে আবদুল মন্নানের সহযোগিতায় অচেতনবস্থায় বোনকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামী রফিক জানান, স্ত্রীর ভাইয়ের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেয়ায় তার স্ত্রীর সাথে তার ঝগড়া হয়েছে। দুলারহাট থানার ওসি মোঃ মোরাদ হোসেন জানান, এঘটনায় কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply